আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ হোক সে প্রতিবন্ধী অথবা অটিস্টিক। যত্ন ও অনুপ্রেরণা পেলে অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিশুরাও একজন সুস্থ স্বাভাবিক শিশুর মত ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের কান্ডারী হয়ে বেড়ে উঠতে পারবে। আসুন আজকে আমরা অটিস্টিক শিশুদের বৈশিষ্ট ও আচার আচরণ সম্পর্কৃত তথ্য জেনে নিই।
অটিস্টিকদের বৈশিষ্টঃ অতি চাঞ্চল্য, জেদী ও আক্রমণাত্মক আচরণ, অহেতুক ভয়ভীতি, খিচুনী ইত্যাদি বৈশিষ্ট একজন অটিস্টিকের থাকতে পারে। অটিজমে আক্রান্তদের আচার-ব্যবহার এবং সংবেদন পদ্ধতি অন্যদের চেয়ে অনেক আলাদা হয় এবং আক্রান্তদের মধ্যেও থাকে অনেক পার্থক্য। শব্দ, আলো, স্পর্শ ইত্যাদির প্রতি অটিস্টিকদের আচরণ সাধারণদের থেকে বেশ পৃথক ও অদ্ভুত। শারীরিক দিক দিয়ে অটিস্টিক সাথে সাধারণদের কোন পার্থক্য করা যায় না। অবশ্য মাঝে মাঝে শারীরিক বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সাথে অটিজম একসাথে আসে। অটিস্টিকদের মস্তিষ্কের আকৃতি সাধারণের চেয়ে বড় হয়ে থাকে, তবে এর প্রভাব সম্বন্ধে এখনও সঠিক কিছু জানা যায়নি।
অটিজম আক্রান্ত শিশুঃ * অন্যদের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে না, অর্থাৎ কারোসাথে বন্ধুত্ব হয় না, একত্রে খেলে না, চুপচাপ থাকে, চোখে চোখ রাখে না, জড় বস্তুকে মানুষের মত মনে করে, ভালোবাসা বোঝে না * বার বার একই কাজ করতে থাকে। * যে কোন একটি খেলনা বা জিনিসের প্রতি প্রবল আকর্ষন থাকে এবং সেটি সব সময় সাথে রাখে। * অনেক সময় স্বাভাবিক শব্দেই উত্তেজিত হয়ে যায়। * নিজেকে নিয়েই সারাদিন ব্যস্ত থাকে, অন্যদের ব্যাপারে কোনোই আগ্রহ থাকে না, ইত্যাদি। চিকিৎসাঃ অটিজমে আক্রান্ত শিশুর প্রথম চিকিৎসাই হলো তার রোগ শনাক্ত করা। কোনো রকম ওষুধ দিয়ে অটিজমের শিশুকে সারিয়ে তোলা সম্ভব নয়। অটিজম যে ধরনের সমস্যা, সে ধরনের সমস্যা সমাধানের কোনো রাতারাতি চিকিৎসাপদ্ধতি নেই, রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি পরিচর্যার পরিকল্পনা। অটিস্টিক শিশুর বিশেষ শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। এই শিক্ষা ছাড়া তার চিকিৎসার আর কোনো বিকল্প নেই। এই শিক্ষার মাধ্যমে তাকে স্বাধীনভাবে চলার উপযোগী করা সম্ভব। তাই অটিজম আক্রান্ত শিশুদের শিক্ষার সুযোগ করে দেয়া গেলে দেখা যাবে তারা সমাজের জন্য দায় হবে না বরং সম্পদ হয়ে উঠতে পারে। কারন অটিজম শিশুদের প্রতিভা, তারা অনেক প্রতিভাবান হয়ে থাকে। তাদের প্রতিভা কাজে লাগাতে পারলে দেশে ও মানুষের অনেক কল্যান হবে। তাদের প্রতিভা কাজে লাগানোর জন্য অটিস্টিক শিশুদের বিশেষ ধরণের শিক্ষার একান্ত প্রয়োজন । আর এ কারণে অটিজমে আক্রান্ত শিশুকে বিশেষ প্রয়োজন সম্পন্ন শিশু বা বুদ্ধিবৃত্তিক চাহিদাসম্পন্ন বলা হয়। এ সব শিশুকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে তাদের অনেকেই স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারে।