@Muktadir8788
হঠাৎ শীতটা বেশ জাকিয়ে আসলো আর আমার পা পড়লো চট্টগ্রামে। শহরটা আমার বেশ পছন্দ, মাঝে মাঝেই অফিসের কাজে আসতে হয় এখানে । অবশ্য এবার আসার ইচ্ছে ছিলোনা একদমই। মানিব্যাগের স্বাস্থ্য খুব একটা ভালো যাচ্ছে না আজকাল, তারপর আবার মাসের শেষ। বাস থেকে নেমে কিছুদূর যেতেই আবিষ্কার করলাম, খারাপ স্বাস্থ্য নিয়ে বহুদিন আমার সাথে থাকা মানিব্যাগটা নেই! সামান্য কিছু টাকা কাঁধের ব্যাগে ছিলো বলে রক্ষা কিন্তু তা দিয়ে কিভাবে চলবো সেটা ভেবে কিছুক্ষণ চুল ছিঁড়লাম। তারপর ভাবলাম সস্তা হোটেলে উঠবো, খাবো সস্তা খাবার। রাগ ও দুঃখে অনেক ক্ষণ মন খারাপ করে থেকে রাতের খাবার খেতে গেলাম। খাবার খেয়ে স্বভাবমত ভুঁড়ি উচু করে রাস্তায় হাঁটছি এমন সময় খেয়াল করলাম ফুটপাথের পাশে এক বৃদ্ধা পাতলা কাঁথা নিয়ে শোবার আয়োজন করছে। এত ঠাণ্ডার ভেতর বৃদ্ধা ছেড়া একটা কাথা নিয়ে ঘুমাতে যাচ্ছে ব্যাপারটা খুব করুণ। ব্যাপারটা অসম্ভব করুণ হয়ে যায় যখন দেখি বৃদ্ধা শীতে কাঁপছেন । ব্যাপারটা ঠিক হজম করতে পারলাম না। খালি সেই বৃদ্ধার কথা মনে হতে লাগলো। রাতে কম্বল নিয়ে ঘুমাতে পারছিলাম না, মনে হচ্ছিলো ঐ বৃদ্ধার ফুটপাথে ছেড়া কাঁথা নিয়ে ঘুমাবার কথা। প্রচন্ড অপরাধবোধ কাজ করছিলো কোনো অপরাধ না করেই। পরদিন বিকেলে দিনের কাজ শেষে মনে হলো আমার এই কয়েকদিন কিভাবে যাবে সেটা জানিনা কিন্তু এই অপরাধবোধ থেকে আগে বাঁচতে হবে। যে অল্পকিছু টাকা ছিলো তার প্রায় পুরোটা দিয়েই একটা কম্বল কিনলাম সেই বৃদ্ধার জন্য। মনে হচ্ছিলো তার শীতের যন্ত্রনা একটু কমলে হয়তো আমার এই অপরাধবোধও কিছুটা কমবে।
রাতেরবেলা সেই ফুটপাথের পাশে অপেক্ষা করতে থাকলাম বৃদ্ধার জন্য। ভেবে বেশ ভালো লাগছিলো কম্বলটা পাওয়ার পর বৃদ্ধার অনুভূতি কেমন হবে। হঠাৎ খেয়াল করলাম বেশ কিছু সময় কেটে গেলেও বৃদ্ধা আসছেননা। অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করেও বৃদ্ধার দেখা পেলামনা। পুরো রাস্তার ঘুরলাম, আসে পাশের রাস্তা গুলোতেও খুঁজলাম কিন্তু তাকে কোথাও পেলাম না। অনেকক্ষণ খোঁজার পর একসময় ব্যার্থ মনে হোটেল রুমে ফিরে গেলাম। খুব বেশি মন-খারাপ লাগছিলো।
পরের দিন রাতে আবার বের হলাম সেই বৃদ্ধার সন্ধানে, কিন্তু কোথাও পেলামনা তাকে। অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করলাম, অনেক ক্ষণ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরলাম কিন্তু কোঁথায় সে? আমি চট্টগ্রামে আরো পাঁচ দিন ছিলাম, প্রতি রাতেই কম্বল নিয়ে বৃদ্ধাকে খুঁজতে বের হতাম, যদি তাকে পাই।
কাউকে মন থেকে কিছু দিতে চেয়েও দিতে না পারার কষ্টটা খুব গভীর। সেই কষ্ট নিয়েই ঢাকা ফিরে আসলাম।
(শীতরাতের অপরাধবোধ নামে এই গল্পটা আগেও পোষ্ট করেছিলাম যা আমার জীবনের এক
সত্য ঘটনা । আজও প্রায়ই আমি সেই অপরাধবোধে ভুগি। আসলে আমাদের সবার ভেতরেই
এমন কিছু অপরাধবোধ বা ব্যাথা থাকে । সেই সাথে আমাদের ভেতর কিছু
দ্বায়িত্ববোধ থাকে । সেই দ্বায়িত্ববোধ থেকে আমরা দাড়াতে চাই শীতার্তদের
পাশে, আর সাথে চাই আপনাকে, তোমাকে ও তোকে ।
আমাদের আর্থিক সাহায্য পাঠানোর জন্য
--বিকাশ নম্বর: ০১৯১২৫৬২০৭২ (পার্সোনাল)
বিকাশ নম্বর: ০১৮২০৫৮২৬৩৬ (পার্সোনাল)
ডাচ বাংলা মোবাইল একাউন্ট নম্বর: ০১৬৭৪৫৬৫৮৯৮০
ব্যাংক এ্যাকাউন্ট ডিটেইলসঃ
Name of the Account: MD. YASEEN KHAN
Account No: 105 - 101 - 70249
Dutch-Bangla Bank Ltd
Foreign Exchange Br.
Motijheel, Dhaka.
যে কোন প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৯১২৫৬২০৭২।
আশা করি আমাদের ছোট ছোট প্রচেষ্টা বড় কিছুতে রূপান্তরিত হবে।
অথবা,
বেশতো সাইট টিতে কোনো কন্টেন্ট-এর জন্য বেশতো কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়।
কনটেন্ট -এর পুরো দায় যে ব্যক্তি কন্টেন্ট লিখেছে তার।