গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও বেঙ্গল এন্টারটেইনমেন্ট প্রযোজিত আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গল্প অবলম্বনে, জাহিদুর রহিম অঞ্জন পরিচালিত 'মেঘমল্লার' ছবিটি ১২ ডিসেম্বর, শুক্রবার ঢাকায় মুক্তি পেয়েছে। এখন বসুন্ধরা স্টার সিনেপ্লেক্স, যমুনা ব্লকবাস্টার, বলাকা- ২ ও শ্যামলী সিনে ডিজিটালে প্রদর্শিত হবে এই ছবিটি। 'মেঘমল্লার' পরিবেশন ও বিতরণের কাজ করছে বেঙ্গল ক্রিয়েশন'স।
কাহিনী-
১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় বর্ষার দিনে মধ্যবিত্ত একটি পরিবারের সাহস-শংকা, আশা-নিরাশার টানা তিন দিনের কাহিনী নিয়ে গড়ে উঠেছে মেঘমল্লার ছবির বিয়োগান্তক আখ্যান ।
বাংলাদেশের একটি মফস্বল শহরের সরকারী কলেজের কেমিস্ট্রির শিক্ষক নূরুল হুদা গল্পের মূল চরিত্র। স্ত্রী আসমা ও ৫ বছরের মেয়ে সূধা’কে নিয়ে তার সুখ-দুঃখের মধ্যবিত্ত সংসার। আর তাদের সঙ্গে থাকে আসমার ছোট ভাই মিন্টু।
কাউকে কিছু না বলে মিন্টু একদিন মুক্তিযুদ্ধে চলে যায়। কিন্তু নূরুল হুদাকে ফেলে যায় জীবন-মৃত্যুর সঙ্কটের মধ্যে। তারপরও নূরুল হুদা নিয়মিত কলেজে যায়, পাকিস্থান পন্থী শিক্ষকদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। মধ্যবিত্তের শঙ্কা, ভয়, পিছুটান তাকে অসহায় করে তোলে।
ঘোর বর্ষনের এক রাতে মুক্তিযোদ্ধারা কলেজে এবং পাশের আর্মি ক্যাম্পে আক্রমন করে। কোন কারণ ছাড়াই পাকিস্থানী আর্মি নূরুল হুদা এবং তার বন্ধু আব্দুস সাত্তার কে ধরে নিয়ে যায়। বৃষ্টির মধ্যে যাবার সময় আসমা তাকে মিন্টুর একটা ফেলে যাওয়া রেইনকোট পরিয়ে দেয়।
পাকিস্থানী আর্মির সামনে নূরুল হুদা প্রথমে ভয় পেয়ে যায়। প্রমান করার চেষ্টা করে সে একজন শিক্ষক মাত্র, মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তার কোন সংশ্রব নাই। কিন্তু নির্যাতনের মাত্রা ক্রমশঃ বাড়তে থাকে। আঘাতে নূরুলহুদা’র নাকমুখ দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। রক্তের দিকে তাকিয়ে হঠাৎই তার মিন্টুর কথা মনে হয়; সে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাবতে শুরু করে। যার জন্যে, মৃত্যু বা আত্মদান কোন ব্যাপারইনা। সে বলে আমি সব কিছুজানি, কিন্তু কিছুই বলবো না। মেজরের একটা গুলিতে নূরুলহুদা নিথর হয়ে যায়।
দেশ স্বাধীন হয়। কিন্তু যুদ্ধ অনেক মানুষের জীবন কেড়ে নেয়, আর ক্ষত রেখে যায় কাছের মানুষের হৃদয়ে। আসমা আর সূধা’র জীবনে যেমন।