দীপ্তি
প্রশ্ন করেছেন

দুবলার চর বাংলাদেশ অংশের সুন্দরবনের দক্ষিণে, কটকার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং হিরণ পয়েন্টের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত একটি দ্বীপ যা চর নামে হিন্দুধর্মের পূণ্যস্নান, রাসমেলা এবং হরিণের জন্য বহুল পরিচিত। কুঙ্গা ও মরা পশুর নদের মাঝে এটি একটি বিচ্ছিন্ন চর পর্যটন সুবিধার দিক থেকে অনেক পিছিয়ে থাকলেও সৌন্দর্য আর বৈচিত্র্যের দিক থেকে অনেক এগিয়ে এই এলাকাটি। প্রতি বছর কার্ত্তিক মাসে (খ্রিস্টীয় নভেম্বর) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাসমেলা এবং পূণ্যস্নানের জন্যও দ্বীপটি বিখ্যাত। যদিও বলা হয়ে থাকে, ২০০ বছর ধরে এ রাসমেলা হয়ে চলেছে, তবে জানা যায়, ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে হরিচাঁদ ঠাকুরের এক বনবাসী ভক্ত, নাম হরিভজন (১৮২৯—১৯২৩), এই মেলা চালু করেন। প্রতিবছর অসংখ্য পুণ্যার্থী রাসপূর্ণিমাকে উপলক্ষ করে এখানে সমুদ্রস্নান করতে আসেন। দুবলার চরে সূর্যোদয় দেখে ভক্তরা সমুদ্রের জলে ফল ভাসিয়ে দেন। কেউবা আবার বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে ভজন-কীর্তন গেয়ে মুখরিত করেন চারপাশ। দুবলার চরের রাসমেলায় স্থানীয় লোকজন ছাড়াও দূর-দূরান্তের শহরবাসী এমনকি বিদেশি পর্যটকেরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে থাকেন। তিনদিনব্যাপী এ মেলায় অনেক বিদেশী পর্যটকেরও সমাগম হয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই দুবলার চর-দ্বীপটি মূলত একটি জেলেপল্লী। দুবলার চরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপরূপ, মন মাতানো দৃশ্য সব পর্যটককে অনেক আকৃষ্ট করে থাকে। দুবলার চরের লোকসংখ্যা প্রায় ৬০০। দুবলার চরের কিছু বাসিন্দা নৌকা চালানোয় খুবই পারদর্শী। তারা পর্যটকদের নৌকায় করে বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখান। দুবলার চরের চারদিকে রয়েছে অসংখ্য সুন্দরী ও কেওড়া গাছ। যে গাছগুলো তার গভীর মায়া-মমতায় জড়িয়ে রেখেছে দুবলার চরের প্রকৃতিকে। দুবলার চর অন্য যে কারণে বেশি বিখ্যাত তা হলো এর শুঁটকি মাছ। এই চরের শুঁটকি মাছের মধ্যে রয়েছে রূপচাঁদা, কোরাল, লইট্যা, ফাইস্যা ইত্যাদি। মাছ ধরার সঙ্গে চলে শুঁটকি শুকানোর কাজ। দুবলার চর রয়েছে বিচিত্র ধরনের প্রাণী-বৈচিত্র্য ও বিরল প্রজাতির পশুপাখি। পৃথিবীর অন্যতম আকর্ষণীয় প্রাণী হরিণের ব্যাপক বসবাস রয়েছে দুবলার চরে। আরো আছে বাঘ,ও কুমির এবং দুবলার চরের জেলেপল্লীতে বনদস্যুদের উৎপাত | * কীভাবে যাবেন : প্রথমেই আপনাকে ঢাকা থেকে খুলনার উদ্দেশে রওনা হতে হবে। ঢাকা থেকে খুলনার মংলা পোর্টে যেতে হবে। এরপর সেখান থেকে আপনাকে ট্রলার কিংবা লঞ্চ ভাড়া করে যেতে হবে |
