

সেন্টমার্টিনের সৈকতে যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আছে, তার চেয়ে হাজার গুণ বেশি সৌন্দর্য রয়েছে সমুদ্রের তলদেশে। এই সৌন্দর্য পর্যটকদের মাঝে তুলে ধরতে পারলে সারাবিশ্ব থেকে স্কুবা ডাইভিং করতে বাংলাদেশে ছুটে আসবে লাখো পর্যটক। যা দেশের পর্যটনশিল্পকে সমৃদ্ধ করতে জোড়ালো ভূমিকা রাখবে। কিন্তু এ শিল্পকে তুলে ধরতে সরকারি কিংবা বেসরকারি পর্যায়ে নেই কোন পৃষ্ঠপোষকতা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমুদ্র সৈকতে চলাচলকারী জলযানগুলোর অসচেতনতা আর পর্যটকদের উদাসীনতায় নষ্ট হচ্ছে সাগরের নিচের সৌন্দর্য। সমুদ্রের নিচের সৌন্দর্য যেভাবে বিনষ্ট হচ্ছে, তা এখনই ঠেকাতে না পারলে নীরবেই হারিয়ে যাবে অমূল্য সম্পদ।
সমুদ্রের তলদেশে ফটোগ্রাফি করা ফটোগ্রাফার শরিফ সারোয়ার বলেন, সমুদ্রের তলদেশে গিয়ে দেখেছি, কীভাবে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে পানির নিচের কোরালপ্রাচীরগুলো। ভ্রমণকারীদের ফেলা নোঙর, পর্যটকদের ফেলা ময়লা-অবর্জনা আর নৌকার লগি-বৈঠার আঘাতে নান্দনিক কোরালপ্রাচীরগুলো বিলীন হওয়ার পথে। তিনি বলেন, বিভিন্ন রঙের কোরাল, ঝিনুক আর রং-বেরঙের মাছের ঝাঁক দেখে কেবল ফটোগ্রাফাররাই মুগ্ধ হন না; মুগ্ধ হন পর্যটকরাও।
স্কুবা ডাইভিং-এর প্রশিক্ষক আতিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্রতলের সৌন্দর্য দেখতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতি বছর পর্যটক ছুটে আসেন। তবে আমাদের দেশের সমুদ্রের তলেও যে যাওয়া যায় এ ধারণাই হয়তো অনেকের নেই। এই শিল্পের বিকাশ ঘটাতে পারলে সমৃদ্ধ হবে পর্যটন ক্ষেত্র। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্কুবা ডাইভিং-এর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী হলেও আমাদের দেশে এখনো তা খুব বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেনি। জিওগ্রাফি চ্যানেলে অনেকে মুগ্ধ হয়ে স্কুবা ডাইভিং অবলোকন করলেও বাংলাদেশের সমুদ্রের তলদেশেও যে স্কুবা ডাইভিং করা সম্ভব এ ধারণাই অনেকের নেই।
পানির নিচের সৌন্দর্য দেখার জন্য মূলত দু'ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করেন পর্যটকরা। এর একটি পদ্ধতির নাম Self Contained Underwater Breathing Apparatus-(Scuba diving) 'স্কুবা ডাইভিং' অন্যটি 'স্নোরকেলিং'। এই দু'ধরনের পদ্ধতিতে পানির নিচে ডুব দিয়ে সাঁতরানোকে বলা হয় 'স্কুবা ডাইভিং'। পানির নিচের দৃশ্যের ছবি তুলতে স্কুবা ডাইভিংয়ের বিকল্প নেই। অন্যটি হচ্ছে, পানির সমান্তরালে ভেসে শরীরের পেছনের অংশ পানির ওপরে রেখে, সামনের অংশ পানির নিচে ডুবিয়ে দৃশ্য অবলোকন করা, যাকে বলা হয় 'স্নোরকেলিং'। এ পদ্ধতিতে পানির গভীরে যাওয়া যায় না।
প্রশিক্ষক আতিকুর রহমান বলেন, আমরা ১৯৯৬ সাল থেকে স্কুবা ডাইভিং এর কাজ শুরু করলেও বাংলাদেশের সমুদ্রের পানির নিচেও যে যাওয়া যায় তা স্বীকৃতি পায় ২০০০ সালে। স্কুবা ডাইভিং করতে বছরে ৮০ থেকে ১০০ জন ব্যক্তি আসেন। বেশিরভাগই বিদেশি। দেশের কিছু ছেলে-মেয়ে এই প্রশিক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন দেশে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন। কারণ স্কুবা ডাইভিং বিশ্বের প্রথম সারির রোমাঞ্চকর পর্যটন-বিনোদন।
সুস্থ থেকো, ভালো থেকো নিরন্তর ............. ধন্যবাদ দীপ্তি:)
সংগৃহীত


হুম, সেন্টমার্টিনেই এখন করতে পারেন স্কুবা ডাইভিং কিংবা স্নোর্কেলিং। SCUBA এর পুরো অর্থ হল Self-contained underwater breathing apparatus. অর্থাৎ পানির নিচে নিশ্বাসের পুরো নিয়ন্ত্রণ অভিযাত্রীর নিজের হাতে থাকে। তাই সমুদ্রতলের জগত দেখার জন্য এর থেকে ভালো উপায় আর কিছু নেই।
তাই দেরি না করে একটু সময় নিয়ে গিয়ে দেখে আসুন সমুদ্রের তলদেশে আপনার জন্য কী চমক অপেক্ষা করছে। কম খরচে স্কুবা ডাইভিং এর জন্য যেতে পারেন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে। সেন্টমার্টিনের স্বচ্ছ সমুদ্রের নিচে দেখা মিলবে বিচিত্র সব হার্ড ও সফট জীবন্ত কোরালের। দেখা পাবেন বহুবর্ণের জলজ উদ্ভিদের। পানির নিচে খুব অল্প যায়গাতেই এত রঙের সমাহার যে ডাঙ্গায় তা একসাথে খুব কমই দেখা যায়। প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিনে যান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে, অথচ মাত্র মাইলখানেকের ভিতরেই সমুদ্রের নীচে যে বিপুল ঐশ্বর্য্য আছে তা অজানাই থেকে যায় তাদের।
বাইরে থেকে দেখতে যতটা উত্তাল সমুদ্র, পানির নিচে ততটাই শান্ত। প্রাগৈতিহাসিক কালের এই প্রকৃতি সেখানে অনাদি কাল থেকে স্থির হয়ে আছে। কৃত্তিম অক্সিজেন ভর্তি ট্যাঙ্ক নিয়ে পানির গভীরে যখন আপনি যাবেন, হিসাব রাখতে পারবেন আপনার প্রতিটি নিশ্বাসের, আলাদা করে অনুভব করতে পারবেন আপনার এক একটি মুহূর্ত। মাছেদের সাথে সাতার কাটতে কাটতে আপনি ভালোবেসে ফেলবেন অদ্ভুতরকম শান্ত সুন্দর ওই জগতটাকে। আপনার হয়ত আর ফিরতেই ইচ্ছা করবে না।
